নিশ্চয়ই সকল আমাল (এর প্রতিদান) নির্ভর করে নিয়াতের উপর, প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য তাই রয়েছে, যা সে নিয়াত করে। (১:১ বুখারিঃ তাওহীদ পাবলিকেশন)

“আমাদের পুর্ব প্রজন্মের একজন মানুষ বলেছিলেন, 

খারাপ কাজের একটি শাস্তি হলো আরো খারাপ কাজ হওয়া এবং ভালো কাজের একটি পুরষ্কার হলো আরো ভালো কাজ হওয়া।”

— ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)



“আমাদের চোখ এবং অন্তরের মাঝে একটা সম্পর্ক রয়েছে যার ফলে একটির কারণে অন্যটি প্রভাবিত হয়। এদের একটি যদি ভালো থাকে তাহলে অন্যটিও ভালো থাকে, আবার একটি যদি ভ্রষ্ট হয় তাহলে অপরটিও ভ্রষ্ট হয়ে যায়। যদি অন্তর ভ্রষ্ট হয়, চোখের দৃষ্টিও ভ্রষ্ট হয়ে যাবে, আবার যদি চোখের দৃষ্টি ভ্রষ্ট হয় তাহলে অন্তরও ভ্রষ্ট হয়ে যাবে। একইভাবে, যদি এদের একটি প্রশান্ত থাকে, অপরটিও প্রশান্ত থাকবে।

ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)


ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম বলেন:

আপনার নিজ অন্তরকে খুঁজে পেতে চেষ্টা করুন তিনটি স্থানে–

১) যখন কুর’আন তিলাওয়াত শুনবেন,

২) যেসব মজলিশে (আল্লাহর) যিকির হয়,

৩) এবং যখন (একাকী) গোপনে থাকবেন।

এই জায়গাগুলোতে যদি আপনি তা খুঁজে না পান, তাহলে আল্লাহর কাছে দু’আ করুন যেন তিনি আপনাকে একটি অন্তর দান করেন, কেননা আপনার আসলে সেটি নেই।

— ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)



“আত্মার বিরুদ্ধে জিহাদ হলো কাফির এবং মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জিহাদের ভিত্তি।”

— ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)



“জুমু’আর দিনে নিজের সবচাইতে উত্তম পোশাকটি পরা হলো সুন্নাহ।”

— ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)



“প্রতিটি পাপ আরো অনেক পাপের জন্ম দেয়, একটি পাপ আরেকটি পাপের দিকে নিয়ে যেতে থাকে যতক্ষণ না পর্যন্ত সেই পাপরাশি মানুষটিকে এমনভাবে কাবু করে ফেলে যে কৃত পাপগুলোর জন্য তাওবা করাকে তার কাছে কঠিন বলে মনে হয়।”

— ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)



“আপনি যখন কোন সৃষ্টিকে ভয় করবেন তখন তার থেকে দূরে পালাতে চেষ্টা করবেন। আপনি যখন আল্লাহকে ভয় করবেন তখন তাকে ভালোবাসবেন এবং তার সাথে ঘনিষ্ট হওয়ার চেষ্টা করবেন।”

— ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)



“যে ব্যক্তি জ্ঞানবিহীন আমল করে সে তো ঐ ব্যক্তির মত যে কোন পথপ্রদর্শক (গাইড) ছাড়াই ভ্রমণ করে। আর এটা জানা কথা যে এমন লোক সম্ভবত রক্ষা পাবে না বরং ধ্বংস হবে।”

— ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)



“আপনি যদি কুরআন থেকে উপকৃত হতে চান তাহলে তিলাওয়াতের সময় সম্পূর্ণ অন্তর দিন (কী বলা হচ্ছে বুঝতে চেষ্টা করুন), শোনার ব্যাপারে মনোযোগী হোন এবং কল্পনা করুন আল্লাহ আপনার সাথে সরাসরি কথা বলছেন।”

— ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)



“সে-ই মানুষ যে তার অন্তরের মৃত্যুকে ভয় করে, শরীরের মৃত্যুকে নয়।”

— ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)



“লক্ষ্যপূরণের ব্যাপারে নিষ্ঠাবান থাকলে দেখবেন আল্লাহর সাহায্য আপনাকে চারপাশ থেকে ঘিরে আছে।”

— ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)


“আল্লাহর কাছে আপনি প্রার্থনা করা বন্ধ করে দিলে তিনি রাগান্বিত হন।

অথচ আদম সন্তানের কাছে কিছু প্রার্থনা করলে সে রেগে যায়।”

— ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)



“নিজের জন্য কেনাকাটা করুন (ভালো কাজ করার মাধ্যমে) যতদিন আপনার জন্য বাজার রয়েছে এবং আপনার কেনাকাটার সামর্থ্য আছে।”

— ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)



“সবর (ধৈর্য) তো সেটাই যখন কারো তাকদীরে যা নির্ধারিত হয়েছে তাতে অন্তর কোন রাগ অনুভব করেনা এবং মুখ সে ব্যাপারে কোন অভিযোগ করে না।”

— ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)



“একজন পাপাচারী লোক তার পাপের জন্য অনুতপ্ত হয়না। কারণ তার অন্তর ইতোমধ্যেই মরে গেছে।”

— ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)



‘বান্দা আল্লাহর সামনে দু’বার হাজির হয় : প্রথমবার, যখন সে সালাতে দাঁড়ায়। আর দ্বিতীয়বার, যখন কিয়ামতে হাশরের ময়দানে দাঁড়াবে। যে ব্যক্তি প্রথমবার দাঁড়ানোর হক যথাযথভাবে আদায় করতে পারবে, তার জন্য দ্বিতীয়বার দাঁড়ানো সহজ হবে । আর যে ব্যক্তি প্রথমবারেরটা সহজ ভেবে পূর্ণ গুরুত্ব দিবে না, তার জন্য দ্বিতীয়বারের দাঁড়ানোটা কঠিন হবে।’

— ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)



“অন্য কোন কিছুই একজন বান্দার অতটা বেশি প্রয়োজন নেই, যতটা বেশি প্রয়োজন সরল সঠিক পথের নির্দেশনা।”

— ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)



একবার একজন আবিদ মানুষকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো, “কীভাবে আল্লাহকে ভালোবাসতে হয় আমাকে শেখান।”

তিনি উত্তরে বলেছিলেন, “শিখিয়ে কারো মাঝে আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা তৈরি করা যায় না।”

— ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)



“যে রাতের বেলায় কোন ব্যক্তি সলাতে দাঁড়িয়ে নিজের উপরে মুগ্ধ হয়ে ঘুম থেকে জাগে তার চেয়ে যে রাতে কোন ব্যক্তি অনুশোচনায় বারবার ঘুম থেকে জেগে ওঠে তা উত্তম।”

— ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)



“আল্লাহকে ভয় করা এবং উত্তম চরিত্রের মাঝে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন, কেননা আল্লাহভীতি আল্লাহ ও বান্দার মাঝে সম্পর্কে উন্নয়ন ঘটায় এবং উত্তম চরিত্র একজন ব্যক্তির সাথে অন্যান্যদের সম্পর্ককে উন্নত করে। তাই একজন ব্যক্তির আল্লাহর প্রতি ভয় তার প্রতি আল্লাহর ভালোবাসা পাওয়াকে সম্ভাবনাময় করে এবং সুন্দর আচরণ একজন ব্যক্তির প্রতি অন্যদের ভালোবাসা প্রাপ্তিকে সম্ভাবনাময় করে তোলে।

— ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)



“সকল গতি, স্থিতি, মুখনিঃসৃত বাণী এবং কাজ সংঘটিত হয় আল্লাহর অনুমতি এবং ইচ্ছার ফলেই। আল্লাহর অনুমতি ছাড়া কেউ নড়াচড়াও করতে পারে না, আল্লাহর ইচ্ছা ব্যতীত কেউ কোন কাজ করতে পারে না।”

— ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)



“যারা আল্লাহর উপরে বিশ্বাস রাখে তাদের জন্য কষ্টকর সকল কাজগুলোই সহজ হয় যায় যখন তারা জানেন যে আল্লাহ তাদেরকে শুনছেন।”

— ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)



“যে ভালো কাজের ফলে অন্তরে অহংকার সৃষ্টি হয় তার চাইতে যে পাপের জন্য কোন ব্যক্তি আল্লাহর কাছে তার আত্মাকে সমর্পিত করে সেটি আল্লাহর কাছে বেশি পছন্দের।”

— ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)



“সময় নষ্ট করা মৃত্যুর চেয়েও নিকৃষ্টতর। যখন কেউ মারা যায় পৃথিবীর অধিবাসী ও দুনিয়ার সাথে তার সম্পর্ক ছিন্ন হয়; কিন্তু যখন কেউ সময় নষ্ট করে তখন আল্লাহর সাথে তার সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়।”

— ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)


“একজন প্রকৃত আন্তরিক উপদেশদাতার উপদেশ আপনি গ্রহণ না করলেও তিনি কখনো আপনার প্রতি শত্রুতা পোষণ করবেন না।”

— ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)


“সমগ্র দ্বীন হলো উত্তম চরিত্রের। সুতরাং যে তার চরিত্রে আপনার চেয়ে উত্তম হতে পেরেছে, সে দ্বীনদারীতেও আপনার চেয়ে উত্তম হয়েছে।”

— ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)



“জেনে রাখুন আপনি যাকে দান করছেন তার দানটি যতটুকু প্রয়োজন তার চাইতে অকল্পনীয় রকমের বেশি প্রয়োজনীয় বিষয় হলো আপনার এই দানটি আল্লাহর কাছে কবুল হওয়া।”

— ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)



“যখন আদম (আলাইহিস সালাম) জান্নাত থেকে নেমে এসেছিলেন তখন শয়তান আনন্দে উৎফুল্ল হয়েছিলো, কিন্তু সে জানতো না একজন ডুবুরি যখন সাগরে ডুব দেয়, সে মণি-মুক্তা সংগ্রহ করে আবার ভেসে ওঠে।”

— ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)



“পাপকাজের অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে, তার মধ্যে একটি হলো তা আপনার কাছ থেকে জ্ঞান ছিনিয়ে নেবে।”

— ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)



“তুমি আখিরাতের সন্তান হও, দুনিয়ার জীবনের সন্তান হয়ো না, নিশ্চয়ই সন্তান তার মা-কে অনুসরণ করে।”

— ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)



ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম বলেনঃ

“ইবনে তাইমিয়া অত্যন্ত দরিদ্র জীবনযাপন করতেন। তাকে কারাগারে অন্তরীণ রাখা হয়েছিল এবং তিনি অনেক হুমকির মুখে ছিলেন। কিন্তু তার মতন এত সুখী মানুষ আর কখনো কাউকে আমি দেখিনি।”

— ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)



“কোন ভালো কাজ করার পর যদি আপনি অন্তরে মিষ্টতা অনুভব না করেন এবং হৃদয় প্রশান্ত না হয় তাহলে আপনার অন্তরকে সন্দেহ করুন।”

— ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)


“কুফর এবং ঈমান কখনো একসাথে থাকতে পারেনাঃ যখন এদের একটি উপস্থিত থাকে, তখন অন্যটি হারিয়ে যায়।”

— ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)



“আন্তরিকতাবিহীন আমল হচ্ছে পরিষ্কার পানিতে ময়লা মিশিয়ে বয়ে নিয়ে যাবার মত। এটা বহনকারীকে শুধু ভার অনুভব করাবে আর কোন উপকারে আসবে না।”

— ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)


“আমাদের হৃদয় একটা পাখির মতন, মাথাটি যার ভালোবাসা এবং পাখা দু’টি হলো আশা ও ভয়।”

— ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)



“দু’টি অংশের সমন্বয়ে ঈমান; একটি অংশ ধৈর্য (সবর) এবং অপরটি কৃতজ্ঞ হওয়া (শোকর)।”

— ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রাহিমাহুল্লাহ)


Related Posts

"ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম আল-জাওযিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ)"

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

সুন্দর স্বাবলম্বী ভাষায় কমেন্ট করার অনুরোধ রইলো.....

Iklan Atas Artikel

Middle Ad

Middle 2

Registered ad